আইজিপির ৫ নির্দেশ বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশ

 

আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ, ডিআইজি ড. হারুন অর রশিদ, পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী

সৌমিন খেলন : বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদের পাঁচ দফা নির্দেশ পালনের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশের সদস্যরা।

রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ব্যারিস্টার মো. হারুন অর রশিদ (বিপিএম) ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর থেকে শুরু করে রেঞ্জের আওতাধীন বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা।

বর্তমান সময়ে করোনাকে কেন্দ্র করে সেবা দিতে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের ত্যাগে নিঃসন্দেহে ডিপার্টমেন্টের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের এ অর্জন ধরে রাখতে ভবিষ্যত দিনে সেবার মান আরও বাড়াতে হবে বলে মনে করেন ডিআইজি হারুন অর রশিদ। আইজিপির দেয়া পাঁচ দফা নির্দেশনা পালনে বদ্ধপরিকর ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশ।

যেকোনো মূল্যে বাস্তবায়ন করা হবে প্রতিটি নির্দেশনা। এখানে কোনো পুলিশ সদস্যের অনাপত্তি আর উদাসীনতায় আপোষ চলবে না। আইজিপির নির্দেশনা বাস্তবায়নে নেত্রকোনা জেলা পুলিশের সাথে বিশেষ মতবিনিময় সভায় আলোকপাত করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় এই মতবিনিময় সভা।

এদিকে সভা শেষে নেত্রকোনা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকবর আলী মুনসী এনএনবি বাংলাকে জানান- আইজিপি বাংলাদেশ পুলিশকে পাঁচ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলেছেন। সেই লক্ষ্য বা নির্দেশনা বাস্তবায়নে রেঞ্জের সকল পুলিশকে নিয়ে ক্লান্তিহীন কাজ করছেন রেঞ্জের ডিআইজি হারুন অর রশিদ।

পুলিশকে দেয়া আইজিপির পাঁচ দফা নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে –

১. নিষ্ঠুরতা পরিহার করে চলতে হবে। কোনো পুলিশ সদস্য কারো সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করতে পারবে না। হোক সে কোনো অপরাধী। আইন বা নীতি বহির্ভূত কোনোকিছুকে পুলিশ বিভাগে প্রশয় দেয়া চলবে না।

২. সার্বক্ষণিক কাজ করতে হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। দুর্নীতিতে নিজে জড়াবো না এবং কাউকে জড়াতে দিবো না, নীতি আগলে কাজ করতে হবে। ঘুষ বা অবৈধ লেনদেনে জড়িত হলে মেনে নিতে হবে ডিপার্টমেন্টের চূড়ান্ত শাস্তি বা সিদ্ধান্ত।

৩. যেকোনো মূল্যে নিজ নিজ থানা এলাকা করতে হবে সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত। মাদকে জড়িত কাউকে কোনোভাবে ছাড় দেয়া চলবে না হোক সে যেকেউ। কোনো পুলিশও যদি মাদকে জড়ায় আর তা প্রমাণ হয় তবে তারও হবে না রক্ষা।

৪. কাজ করতে হবে জনকল্যাণে। হোক তা সাধারণ মানুষ বা পুলিশদের কল্যাণ। ডিপার্টমেন্ট ছাড়ার এক সেকেন্ড আগেও মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।

৫ নম্বর তথা শেষ নির্দেশনায় আইজিপি বিট পুলিশিং কার্যক্রম বেগবান করতে বলেন। তিনি মনে করেন- বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ সেবা নিয়ে জনতার দোরগোড়ায় থাকতে পারবে। গোছে যাবে পুলিশ জনতার মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব। জড়তা কাটিয়ে উঠতে পারলে অসহায় মানুষ খুব সহজেই নিজের সমস্যার কথা পুলিশকে খুলে বলতে পারবেন।

তাছাড়া একজন পুলিশেরও এলাকা সম্পর্কে ধারণা থাকায় যেকোনো ঘটনা দুর্ঘটনায় যাতায়াত করতে পারবে। এতে করে অনেক অপরাধ বা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হ্রাষ পাবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে নিশ্চিত হবে পুলিশি উপস্থিতি।

ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনা অনুযায়ী পাঁচ দফা বাস্তবায়নে কাজ করছে নেত্রকোনা জেলা পুলিশ। এমন দাবি করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় চব্বিশ ঘন্টা বিরামহীন সেবা দিচ্ছে পুলিশ। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চতের পাশাপাশি জনসচেতনতা, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক ব্যবহারে সাধারণ মানুষকে করা হচ্ছে উদ্বুদ্ধ। কর্মহীন হয়ে পড়া অনাহারীর ঘরে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে খাদ্যসামগ্রী। সবমিলিয়ে ত্যাগ স্বীকার করে নিজের জীবন উৎসর্গের মাধ্যমে নিজের দায়িত্ব তথা জনসেবা করছে পুলিশ।

ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন- রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ড. মো. আক্কাছ উদ্দিন ভুঁইয়া, নেত্রকোনা জেলা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী। এছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) আল-আমিন হোসাইন, মোরশেদা খাতুন (সদর সার্কেল), মো. মাহমুদুল হাসান (কেন্দুয়া সার্কেল), সহকারী পুলিশ সুপার (দুর্গাপুর সার্কেল) মাহমুদা শারমীন নেলীসহ জেলার সদরসহ দশ থানার অফিসার ইন-চার্জ এতে অংশ নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *