নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন : আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ

সৌমিন খেলন : নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় মহাদেও নদীর দুকূল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিয়ে জানতে চেয়েছেন জেলার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি নিয়ে জেনে কলমাকান্দা থানা কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক সোহেল ম্রং।
সম্প্রতি সময়ে উপজেলার মহাদেও নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিয়ে দেশের বেসরকারি একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশনে প্রতিবেদন সম্প্রচার হয়। পরে বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে ওই প্রতিবেদন চান বিচারক। আদালত সূত্র এনএনবি বাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচারিত সংবাদে উঠে এসেছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকাটির পরিবেশ ও জনজীবন চরমভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে। রংছাতি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আব্দুল গণি এবং জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলমের ছত্রছায়ায় বালু উত্তোলিত হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে প্রকাশ পায়।
এদিকে আদালতের প্রতিবেদন চাওয়ার আদেশে বলা আছে টিভি সংবাদটির সত্যতা থাকলে তা হবে বালুমহাল ও নদী ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর স্পষ্ট লঙ্ঘন। সেক্ষেত্রে আপামর জনতার সুষ্ঠু বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে অধিকতর তদন্ত করে প্রতিবেদন চেয়েছেন আদালত। প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বলা হয়।
প্রথমত জানতে হবে-
১. নদীতে ঘোষিত কোনো বালুমহাল আছে কি-না? যদি থাকে সেক্ষেত্রে জানতে হবে কোন এলাকা ইজারার আওতাধীন এবং সেইগুলো চিহ্নিত আছে কি-না? পাশাপাশি আরও জানতে হবে কারা সেই ইজারাদার?
দ্বিতীয়ত জানতে হবে-
২. ইজারাদারের বাইরেও কোনো ব্যক্তি বালু উত্তোলন করে কি-না ? যদি কেউ উত্তোলন করে তবে তিনি বা তারা করা?
তৃতীয়ত যে বিষয়টি জানতে হবে-
৩. বালুমহালের অন্তর্ভুক্ত নয় এমন এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হয় কি-না? যদি করা করা হয় এরসাথে কে বা জড়িত? কি দিয়ে উত্তোলন করা হয় নদীর সেই বালু? এবং কিভাবে করা হয় তা পরিবহন?
সর্বশেষ অর্থাৎ চার নম্বর যে বিষয়টি জানতে হবে-
৪. বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন কেউ লঙ্ঘন করেছে কি-না? যদি করে থাকে তবে তিনি বা তারা কারা অবশ্যই জানতে হবে।
সেই সাথে সকল তথ্য উপাত্ত হাতে নিয়ে আসছে বুধবার (৫ আগস্ট) তারিখের মধ্যে থানা কর্তৃপক্ষকে আদালতে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন দিতে আদেশ দেয়া হয়। প্রতিবেদন চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী পুলিশ সুপার (দুর্গাপুর সার্কেল) কার্যালয়েও পাঠানো হয়েছে অনুলিপি।
কলমাকান্দা থানার অফিসার ইন-চার্জ মাজহারুল করিম এনএনবি বাংলাকে জানান- আদালতের চাওয়া তদন্ত প্রতিবেদনের আদেশ কপিটি ইতোমধ্যে পেয়েছেন তিনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *