শুভ্র হত্যা মামলায় ‘মেয়র’ আসামি, বিএনপি নেতা রিয়াদসহ গ্রেফতার- ৪

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
এনএনবি বাংলা.কম
শুভ্র হত্যার রাতে ঘটনাস্থলে পুলিশ কর্মকর্তারা
ছবি- এনএনবি বাংলা
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) : ময়মনসিংহ গৌরীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সা.সম্পাদক মাসুদুর রহমান শুভ্র হত্যায় গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র আ’লীগ দলীয় নেতা মো. রফিকুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় মেয়র ছাড়াও আরো তেরজনকে করা হয়েছে আসামি। এর মধ্যে হত্যার মাত্র ৫/৬ ঘন্টা ব্যবধানে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মইলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াদুজ্জামান রিয়াদসহ ৪ জনকে করা হয়েছে গ্রেফতার।
বড়ভাই হত্যার ঘটনায় সোমবার (১৯ অক্টোবর) দিনগত রাতে মামলাটি করেছেন শুভ্র’র ছোট আবিদুর রহমান প্রান্ত। তবে তদন্ত ও গ্রেফতার স্বার্থে বাকিদের নাম প্রকাশ করছেন না থানা কর্তৃপক্ষ।
মামলায় অভিযোগ করা হয় প্রকাশ্য এই হত্যাকান্ডে নেপথ্য ভূমিকায় ছিলেন মেয়র রফিকুল। হত্যাকান্ডটি সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। শুভ্রকে কোপানোর পর তাকে মমেকে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর খবর আসে। আর এদিকে মৃত্যুর খবরে ঘটনার রাত থেকেই উত্তপ্ত হয়ে পড়ে গোটা গৌরীপুর শহর। শুভ্র সমর্থক বা অনুসারীরা রাতেই মধ্যবাজার সড়কে ১/২ টি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করেন।
সকাল থেকে শুরু হয় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান রিয়াদ ও মেয়র রিয়াদের বাড়িঘরসহ উপজেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সড়ক অবরোধ পরিস্থিতি সামলাতে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স, র্যাব ও অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী পুলিশ সদস্যদের হিমশিম খেতে হয়। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মেয়রের গাড়ি, বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ছাই হয়ে যায়। হত্যার ঘটনায় উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় হচ্ছে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও মিছিল।
মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম’র দাবি, শুভ্র হত্যার সাথে কোনো ধরণের সম্পৃক্ততা নেই। শুভ্র আমার ছেলের বয়সী। আমি তাকে হত্যার পরিকল্পনা করতে যাবো কেন! দেড়যুুগ ধরে ১৭ জনপ্রতিনিধি এরমধ্যে ভোটে দুবার মেয়র নির্বাচিত আমি। নিজের জনপ্রিয়তার ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। এর সবকিছু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র। আমাকেও মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছে ষড়যন্ত্রকারীরা ; মন্তব্য করেন তিনি।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বোরহান উদ্দিন এনএনবি বাংলাকে জানান, পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চেষ্টা করছে প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে। অধিকতর তদন্ত হবে। মামলায় এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- রিয়াদুজ্জামান রিয়াদ, জাহাঙ্গীর আলম, মো. মজিবুর রহমান ও মো. রাসেল মিয়া। তারা প্রত্যেকে উপজেলার পূর্ব কাউরাট গ্রামের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১৭ অক্টোবর) দিনগত রাত ১০ টার দিকে উপজেলার পান মহল মধ্যবাজারে প্রকাশ্যে শুভ্রকে কোপানো হয়। পরে পর্যায়ক্রমে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ছুটে আসেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহা. আহমার উজ্জামানসহ ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *