স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
পুলিশের জোড়ালো ভূমিকা থাকার পরও উপজেলার বিভিন্নস্থানে পারিবারিক ও সামাজিক নানারকম বিশৃঙ্খলায় ঘটছে একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনা!
চুন থেকে পান খসলেই কথার পরিবর্তে অস্ত্রের আঘাতে হত্যার মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে দেয়া হচ্ছে প্রতিহিংসার জবাব!’
চলমান পরিস্থিতিতে এমনই মন্তব্য করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার ভীত আর শান্তিপ্রিয় সকল মানুষ।
তারা জানালেন, এবার সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলায় রামদার আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছেন গৌরীপুর থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. বোরহান উদ্দিন খান।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ৯ টার দিকে উপজেলার পৌর এলাকার মধ্যবাজারে অফিসার ইন-চার্জ বোরহান উদ্দিন খান’র ওপরে সন্ত্রাসী হামলা হয়।
পুলিশ বলছে, ঘটনার আগে গৌরীপুর পৌরসভার নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া ব্যক্তির নাম জানাজানি হয়। দল থেকে মনোনয়ন পান সাবেক মেয়র শফিকুল ইসলাম হবি।
আসন্ন নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন, মো. সাদিকুর রহমান সেলিম। তিনি মনোনয়ন না পাওয়ায় তার সমর্থনকারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন’র অনুসারীরা কালিপুর বাজারের সেলিম’র চেম্বার থেকে সশস্ত্র মিছিল বের করেন।
এলাকায় দোকানপাট তথা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের চেষ্টায় বেপরোয়া হয়ে পড়ে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গৌরীপুর থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. বোরহান উদ্দিন খানসহ পুলিশ সদস্যরা তাদের দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তকে সম্মান দেখানোর কথা বলে অস্ত্রধারীদের শান্ত হতে বলেন।
এতেই বাধে বিপত্তি। অস্ত্রধারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বোরহান উদ্দিন’র উপর হামলা করে। এদের মধ্যে ডেবিট রকি তার হাতের ধারালো দীর্ঘ রামদা দিয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই বোরহান উদ্দিন’র ওপর কোপ দিয়ে রক্তাক্ত করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এরআগেও শুভ্র হত্যাকান্ডের পর তাৎক্ষণিক মূল আসামিসহ বাকিরা গ্রেফতার হলেও বাজারে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় বাধা দিতে গেলে রকি বোরহান উদ্দিনকে কোপ দেন। তখন কোপ শরীরে না লাগার কারণে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে এবার কোপে আহত হবার পর রক্তাক্ত অবস্থায় বোরহান উদ্দিনকে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান চিকিৎসার পর তাকে থানা প্রাঙ্গণে নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা। এ ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৪) সদস্যরা মাঠে নামেন। গৌরীপুর থানা পুলিশ সদস্যরা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. বোরহান উদ্দিন খান। আহত অবস্থায় তিনি এনএনবি বাংলাকে জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার স্বার্থে অস্ত্রধারীদের মুখোমুখি হন তিনি।
সবাইকে বুঝাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু হামলা চালিয়ে কোপ বসিয়ে কল্পনাতীত ঘটনার জন্ম দেন অস্ত্রধারীরা! ডেবিট রকি মূলত তার হাতের ধারালো রামদা দিয়ে কোপ দেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘মনোনয়ন দেয়া না দেয়ার মালিক আমি? আর দলের হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তের প্রতি যদি তাদের শ্রদ্ধাই না থাকে তবে কিসের রাজনীতি!’
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. শাহজাহান মিয়া এনএনবি বাংলাকে জানান, এ ঘটনায় ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাইনুল রেজা। দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।