স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
এনএনবি বাংলা.কম

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) : যেকোনো সময় যেকোনো পরিস্থিতিতে সরাসরি সাক্ষাৎ অথবা মোবাইল কল করেও কোনো ঘটনা জানালেই দ্রুত সাড়া দিয়েছে গৌরীপুর থানা পুলিশ।
থানা কর্তৃপক্ষ হিসেবে অফিসার ইন-চার্জ মো. বোরহান উদ্দিন খান ঘটনা জেনে শ্রেণি ভেদাভেদ না করেই যখন যেখানে আইনানুগ যে ধরণের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তিনি তাই করেছেন।
করোনা পরিস্থিতি থেকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক বিরোধ বা সংঘর্ষে সকল পুলিশ সদস্যদের নিয়ে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে ছিলেন অফিসার ইন-চার্জ মো. বোরহান উদ্দিন খান।
গরীব দুঃখীদের পাশে ছিলেন পরম বন্ধু বেশে। অপরাধ সংঘটিত হলে সেখানে অপরাধীদের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছেন যমদূত। মাদক, জুয়া, নারী নির্যাতনকারী আর সন্ত্রাসী ছাড় পায়নি কেউ।
নূর মিয়া নামে বয়োবৃদ্ধ এক দিনমজুর বলেন, ‘বর্তমান ওসি স্যারের মতো ওসি আমি পঞ্চাশ বছরে দেখিনি। তিনি হলেন গরীবের কলিজা। কোনো অহংকার নেই, যেকেউ যেকোনো সময় উনার কাছে যেতে পারেন।’
শুধু অর্থসম্পদ নয় ভালোবেসে ভালো ব্যবহার দিয়েও মানুষকে জয় করা যায় উল্লেখ করে নূর মিয়া বলেন, ‘ওসি স্যার সবসময় হাসিখুশি মানুষ। তিনি ভালোবেসে ভালো ব্যবহার দিয়ে গৌরীপুরের সাধারণ মানুষের মন জয় করেছেন। কারো সাথে বদরাগ করতে দেখিনি। রাত দিন বলতে কিছু নেই তার কাছে। ওসি সেজে, স্যার সেজে চেয়ারে বসে থাকেন না বরং আছেই সড়কে।’

গৌরীপুরের মানুষের জন্য ওসি বোরহান নিবেদিত প্রাণ মন্তব্য করেছেন এক পোশাক ব্যবসায়ী। নিজের নাম প্রকাশ করতে না চেয়ে তিনি বলেন, ‘স্যার (ওসি) আসার পর স্বস্তি পেয়েছি। চাঁদাবাজ আর মাতাল সটকে পড়েছে আর যারা আছেন তারা বুঝেশুনে সড়কে পা রাখছে।’
অপরাধ করে ছাড় পায়নি কেউ ওসি বোরহান উদ্দিনের কাছে। অপরাধী যেই হোক গ্রেফতার করতে পিছপা হননি তিনি। মাদক সম্রাট লাজুক মাস্টারের হাতে হ্যান্ডকাফ পড়ার ইতিহাস না থাকলেও সেই ইতিহাস রচনা করেছেন ওসি বোরহান। বিভিন্ন প্রলোভন ও নানারকম নোংরা হুমকির পরও লাজুককে গ্রেফতার করেছেন তিনি।
বিদায় নেয়া বছরে গৌরীপুরের সবচেয়ে সমালোচিত ন্যক্কারজনক ঘটনা, প্রকাশ্যে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শুভ্রকে নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডের কয়েক ঘন্টার মধ্যে মূল আসামিসহ চারজনকে গ্রেফতার করেন বোরহান উদ্দিন খান।
পৌরসভার নির্বাচনে গৌরীপুরে আ’লীগের মনোনয়ন ঘোষণার পর উপজেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মনোনয়ন না পাওয়া প্রার্থী সমর্থকরা প্রকাশ্যে অস্ত্র মিছিল নিয়ে সড়কে তান্ডব চালাতে নামে। কোনোকিছুর তোয়াক্কা না করে বোরহান উদ্দিন শতশত দেশীয় অস্ত্রের মুখোমুখি হন। অস্ত্রধারীদের শান্ত হতে বলে জনসাধারণের জানমালের ক্ষতিসাধন করতে না করেন।
তবে কোনো কথাই মানছিলেন না বেপরোয়া আচরণ করা ব্যক্তিরা। ওসিকে টপকে তারা রাবণের বেশে সামনে অগ্রসর হতে থাকে আর বাধা দিতে থাকেন ওসি। এসময় ডেবিট রকি নামের এক অস্ত্রধারী দুঃসাহসিকভাবে ওসিকে রামদা দিয়ে কোপ দিয়ে বসে। এতে ওসি জীবন রক্ষার্থে হাত দিয়ে কোপ ফেরাতে গিয়ে হাত ও আঙুলের কিছু অংশ কেটে রক্তে ভিজেন।

এ ঘটনায় ওসি আহত হলেও ক্ষতি থেকে বেঁচে যায় গৌরীপুরের সাধারণ মানুষ মানুষ বাজারের ব্যবসায়ীরা। এমনই মন্তব্য গৌরীপুরের অগণিত মানুষের। তারপরও বসে থাকেননি বরং হাতে ব্যান্ডেজ নিয়েই মাঠে কাজ করছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, যেকোনো মূল্যে গৌরীপুরে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পৌরসভার নির্বাচন বা ভোট সম্পন্ন করা হবে। সরকারের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কেউ আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করে জনগণের জানমালের ক্ষতিসাধন করবে তা হবে না।
শুধু এ ঘটনাই নয় ওসি বোরহান উদ্দিন যোগদানের পর থেকেই তার নেতৃত্বে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিয়ে আসছে গৌরীপুর থানা পুলিশের সদস্যরা।

অফিসার ইন-চার্জ মো. বোরহান উদ্দিন খান জানান, চার রাউন্ড গুলিসহ দুটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছেন। এরমধ্যে ১ টি বিদেশি পিস্তল, ১ টি কাটা রাইফেলসহ বিভিন্ন ধরণের দেশীয় ধারালো অস্ত্র।
ইয়াবা ট্যাবলেট ২৬৩ পিস, গাঁজা ৫ কেজি ২৫৫ গ্রাম, ৩ গ্রাম হেরোইন, ৪৪ লিটার জব্দ করা হয়। পুরাতন বিভিন্ন মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাসহ নারী নির্যাতনসহ নানারকম অপরাধে অন্তত পাঁচশো জন আসামিকে করা হয়েছে গ্রেফতার। পুরনো দিনের ন্যায় নতুন বছরেও নিজের দায়িত্ব পালন করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
Real Report
thanks