
মো. মিজানুর রহমান : সময়ের অপচয়, চরম দুর্ভোগ আর জীবন ঝুঁকিতে কেটে গেছে অর্ধশত বছর। চারদিক উন্নয়ন জোয়ারে ভাসলেও নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ধাইজান নদীতে তৈরি হয়নি আজও একটি সেতু!
নির্বাচন এলেই জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দেন তবে কাজের কাজ কিছুই হয় না। অতএব আর কারো কোনো প্রতিশ্রুতি নয়। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি পাকা সেতুর দাবি জানিয়েছেন, উপজেলার বাহাগিলী এবং চাঁদখানা, পৃথক ইউনিয়নের বিশ গ্রামের মানুষ।
সেতু না থাকায় পঞ্চাশ বছর ধরে এসব গ্রামের সকল বয়সী মানুষ দুর্ভোগ আর দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তবুও সুদৃষ্টি যেন ফেরে না কর্তৃপক্ষের। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাঁশের যে সাঁকোটি বানানো সেটিও গ্রামবাসীর তৈরি। প্রতিবছরই স্থানীয়দের উদ্যোগে তৈরি করতে হয় এই সাঁকো।
এমনই সব কথা বলে এনএনবি বাংলার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে নিজেদের দাবি তুলে ধরতে চেয়েছেন ওইসব গ্রামের ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দারা।
তারা বলছেন, নড়বড়ে সাঁকো পারাপার পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনার সবচেয়ে বেশি শিকার হয় কোমলমতি স্কুলগামী শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা আর অসুস্থ মানুষ। এছাড়াও অগ্নিকাণ্ড বা দুর্ঘটনায় জরুরি মুহূর্তে প্রাণ বাঁচাতে এসব গ্রামে আসতে পারে না ফায়ার সার্ভিস, এ্যাম্বুলেন্স অথবা অন্য কোনো গাড়ি।
দুর্ভোগ বা ঝুঁকি এড়াতে ইউনিয়নগুলোর মানুষ বাড়তি আট কিলোমিটার ঘুরে কিশোরগঞ্জ উপজেলা সদরে যান। এতে করে সময় ও অর্থদণ্ড যেমন হয় তেমনই অনেকসময় নির্দিষ্ট কাজ সঠিক সময়ে সম্পাদন হয় না। শিক্ষার্থী আর কর্মজীবীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি যেন আজ গলায় বিঁধে যাওয়া কাঁটা।
অথচ বাড়তি আট কিলোমিটার নয়, ধাইজান নদীতে যদি কাঙ্ক্ষিত সেতু থাকতো তবে মাত্র তিন কিলোমিটার পাড়ি দিলেই কিশোরগঞ্জ উপজেলা সদর।
বাহাগিলী মাছুয়া পাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ, আমিনুর এনএনবি বাংলাকে জানান, একটি মাত্র সেতুর অভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাসহ কৃষি ও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে আছে দুই ইউনিয়নের বিশ গ্রামের মানুষ। যার প্রভাব গোটা উপজেলার উপরই পড়ছে। সেতুটি হলে টোটাল দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে যাওয়া সময়ের ব্যপার।
তাদের মতো আরো অনেকে জানান, বাহাগিলী ইউনিয়নের কাচারী পাড়া, তাতিপাড়া, সন্ন্যাসী পাড়া, গুচ্ছগ্রাম, চেয়ারম্যান পাড়া, মাছুয়াপাড়া এবং চাঁদখানা ইউনিয়নের সঞ্জাবাড়ি নগরবন, ধাইজান নদীরঘাটে সেতু না থাকায় সংকটে পড়েছেন দু’টি ইউনিয়নের অন্তত পনের হাজার মানুষ।
মিজানুর রহমান দুলাল, সমশের আলী, সাদেক মিয়াসহ ভুক্তভোগীরা বলেন, আর প্রতিশ্রুতি শুনতে চাই না কারো। এবার আমরা জীবনের স্বার্থে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি পাকা সেতুর দাবি করছি। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস মানবতার নেত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্তত আমাদের ফিরিয়ে দিবেন না। কেউ না বুঝলেও তিনি আমাদের কষ্টটা উপলব্ধি করবেন। দাবি সম্পর্কে জানতে পারলে, তিনি সেতু না দিয়ে আমাদের ফিরিয়ে দিবেন না।
এদিকে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোতে জনদুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে সেতুর দাবি সংসদ সদস্যকে জানানো হয়েছে বারংবার।