রাজপথে সবার এক দাবি, ‘জাতীয় নকশায় শহীদ মিনার’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
এনএনবি বাংলা.কম

জাতীয় নকশার আদলে শহীদ মিনার নির্মাণ দাবিতে মানববন্ধন | ছবি- এনএনবি বাংলা

ইসলামপুর (জামালপুর) : ‘বাঙালি জাতির অমর একুশে ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ মাতৃভাষা দিবস। বাংলা ভাষা রক্ষার জন্য নিজের প্রাণ দিতেও পিছপা হয়নি সেইদিন ভাষা সৈনিকেরা।

নিজেদের মাতৃভাষা ধরে রাখতেও ঢেলে দিতে হয়েছিলো বুকের তাজা রক্ত। সালাম-রফিক-বরকত-শফিক ও জব্বার ভাষা রক্ষার আন্দোলনে শহীদ হন।

নাম না জানা এমন আরো বীরদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় বাংলা ভাষার স্বাধীনতা। যা জাতিসংঘের স্বীকৃতিতে একুশে ফেব্রুয়ারি আজ সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়।

বাঙালি জাতির এই গৌরবময় ইতিহাস ও মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের স্মরণে জাতীয় নকশায় তৈরি শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা জানানো ও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বর্তমান প্রজন্ম। যা নিঃসন্দেহে হতাশারই বটে।’

নিজ এলাকায় তথা একটি উপজেলায় জাতীয় শহীদ মিনারের নকশার আদলে শহীদ মিনার না থাকার দুঃখ নিয়ে বিস্তরভাবে বলে যাচ্ছিলেন, জামালপুর জেলার ইসলামপুরের এসএসসি ৯৭ ব্যাচ, সংগঠনের সভাপতি টেলিভিশনের একসময়কার আলোচিত প্রযোজক কবি আমজাদ সুজন।

তিনি এনএনবি বাংলাকে বলেন, ‘গল্প শোনা আর প্র্যাক্টিকাল, দুইটি ভিন্ন বিষয়। ধরা যাক, আমরা আমাদের সন্তানদের বই পড়ালাম সেখান থেকে তারা মাতৃভাষার ইতিহাস জানলো। ছবি দেখে শহীদ মিনারও চিনলো।

কিন্তু সেইটি যখন তারা সরাসরি ব্যক্তি জীবনে মিল পাবে না তখন বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখের। মূল নকশার শহীদ মিনার দর্শন থেকে কেন বঞ্চিত হবে নতুন প্রজন্ম? বই এবং বাস্তবতায় যখন মিল খুঁজে পাবে তখন তাদের নিজের মাতৃভাষার প্রতি দরদটাই বেড়ে যাবে। সত্যিকারের দরদ। ভাষা নিয়ে তাদের ভিতরেও আবেগ অনুভূতির সৃষ্টি হবে। মন থেকে শ্রদ্ধা আসবে ভাষা শহীদের প্রতি। যখন তারা প্রতিবার শহীদ মিনারে প্রভাতফেরিতে খালি পায়ে হেঁটে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবে।’

বাঙালি ও বাংলা ভাষার অস্তিত্ব আর নানারকম ব্যখ্যা দিয়ে ইসলামপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশায় অতিদ্রুত একটি শহীদ মিনার নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন, সংগঠনটির সভাপতি এই কবি।

তিনি বলেন, ‘একসময় জনতা মাঠে ছিল শহীদ মিনার। তবে এখন আর সেই আদলে নেই। জাতীয় নকশার আদলে দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনারের দাবিতে সরকারি বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে মৌখিক দাবি জানানোসহ সম্প্রতি দাবি জানিয়ে এক মানববন্ধনও করা হয়েছে ৯৭ ব্যাচের ব্যনারে। পরে একই দাবিতে দেয়া হয়েছে ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কার্যালয়ে এক স্মারকলিপি।

বক্তব্য রাখছেন সংগঠন সভাপতি কবি আমজাদ সুজন | ছবি- এনএনবি বাংলা

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে একাত্মতা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুল খালেক আখন্দ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোজিনা আক্তার চায়না, গাইবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মাকসুদুর রহমান আনছারী, সংগঠনের সহ-সভাপতি লুৎফর কবীর রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাআলম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডি.আই বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক রকিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান কবির রুকন, কোষাধ্যক্ষ মো. শাহীন মিয়া, দপ্তর সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিছ, সদস্য মনিরুজ্জামান লাজু প্রমুখ।

আমজাদ সুজন বলেন, ‘ইসলামপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে শহীদ মিনার হলে আমরা শহীদ মিনার চত্বরে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে একুশে বইমেলার আয়োজন করতে চাই।’

এদিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে পুনরায় শহীদ মিনার নির্মাণ দাবিতে স্মারকলিপি পাওয়ার সত্যতা এনএনবি বাংলায় নিশ্চিত করেন, ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস.এম মাজহারুল ইসলাম। এসময় তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে সকলের সাথে আরো খোলামেলা কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *