পিরানহা বিক্রির দায়ে জরিমানা, চিকিৎসক দিলেন ভয়াবহ তথ্য

পিরানহা বিক্রির দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা | ছবি- এনএনবি বাংলা

সৌমিন খেলন : এক যুগেরও বেশি সময় পার হতে চললো দেশে নিষিদ্ধ হয়েছে বিশ্বে মানুষখেকো হিসেবে পরিচিত রাক্ষুসে প্রজাতির মাছ ‘পিরানহা’।

স্বাদু পানির ২৬০ এবং সামুদ্রিক পানির ৪৭৫ প্রজাতির দেশীয় মাছ রক্ষা করতে রাক্ষুসে পিরানহাকে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার।

সেক্ষেত্রে আইননুসারে পিরানহা দেশে আমদানি, উৎপাদন ও বিপণন সম্পূর্ণভাবে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আইনটি লঙ্ঘিত হলে অর্থদণ্ডসহ রয়েছে কারাদণ্ডের বিধান।

এবার নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রামপুর বাজারে মাছের আড়তে পিরানহা মাছে বিক্রির দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. খবিরুল আহসান।

পিরানহা মাছ বিক্রেতা চার ব্যক্তিকে তিনি নগদ ১৯ হাজার টাকা জরিমানা করেন। বিক্রেতাদেরকে ভবিষ্যতে এ ধরণের কাজ থেকে বিরত থাকারও নির্দেশ দেন। এরই সাথে নিষিদ্ধ পিরানহা প্রায় আট মণ মাছ জব্দ করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দুয়া উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সদস্যরা।

কেন্দুয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. খবিরুল আহসান এনএনবি বাংলার কাছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন- জনস্বার্থে উপজেলা প্রশাসন সবসময় পাশে ছিলো আছে এবং থাকবে। শুধু পিরানহা মাছই নয় জনস্বার্থে আঘাত হানে এমন সকল কাজের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা নিতে সদা প্রস্তুত উপজেলা প্রশাসন।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউট সূত্র বলছে, পিরানহা মাছ দেশের মুক্ত জলাশয় তথা নদী, খালে একবার ঢুকতে পারে তবে দেশীয় ছোট বড় সব মাছের বংশ নির্বংশ করে দিবে।

এই মাছটি বেশি ক্ষুধার্ত হলে পাশের অর্থাৎ সঙ্গী পিরানহাকেও ধরে খেয়ে করে হজম। রয়েছে মুখের ভিতরে ধারালো দাঁত ও জিহবা। মানুষের মতো জিহ্বা দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে শরীরের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি শক্তিতে বসায় কামড়।

সরকার নিষিদ্ধের পরও অসাধু চক্র নিজেদের লাভের আশায় উৎপাদন ও খোলা বাজারে বিক্রি করছে পিরানহা! অপরাধীরা আবার সেখানেও নিচ্ছে আশ্রয়ে প্রতারণা। কারণ, বিক্রির সময় ক্রেতাদের কাছে এরা পিরানহাকেই বলে যাচ্ছে রূপচাঁদা!

নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ | ছবি- এনএনবি বাংলা

এদিকে পিরানহা মাছ খাওয়ার ক্ষেত্রে মানবদেহের ক্ষতিকর নানাদিক তুলে ধরে এনএনবি বাংলাকে জানিয়েছেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের চিকিৎসক মো. ইভান খান।

তিনি বলেন, মাছটির মধ্যে কিছু বিষক্রিয়া আছে। যা মানবদেহের পাকস্থলি পর্যন্ত নষ্ট করে দিতে সক্ষম। এ মাছটির চর্বি একজন মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ারও রয়েছে যথেষ্ট সক্ষমতা। মাছটি খাওয়ার আগে নারীদেরকে অবশ্যই ভাবতে হবে ; বিশেষ করে যারা নববধূ।

কারণ উল্লেখ করে চিকিৎসক আরো বলেন, পিরানহার ফসফেট থেকে হয়ে যায় মূত্র প্রদাহ। শরীর থেকে বের করে দেয় অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যালসিয়াম ও রক্ত। এই বিষয়টি নববিবাহিত একজন নারীরকে করে দিতে পারে বন্ধ্যা। ইভেন মানুষ মেন্টালি ডিজঅর্ডার পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।অ্যালকোহলের চাইতেও ভয়ানক পিরানহা। সুতরাং আগেই ভাবতে হবে, খাওয়ার পরে নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *