সৌমিন খেলন : নেত্রকোনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকবর আলী মুনসীসহ সকল পুলিশ সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জেলার সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতারা।
বুধবার (১০ মার্চ) দুপুরে কৃতজ্ঞতায় পুলিশ সুপারকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তারা।
শ্রীশ্রী কালীবাড়ি কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি বাবন ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র পন্ডিত স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
এসময় পুলিশ সুপার ছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল, মো. আল-আমিন হোসাইন (সদর) ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মঙ্গল চন্দ্র সাহা, উপদেষ্টা নির্মল কুমার দাসসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
***দিন যেতে না যেতেই মন্দিরের স্বর্ণালংকার উদ্ধার, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে স্বস্তি***
প্রসঙ্গত, এরআগের বছর পহেলা ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে নেত্রকোনা শহরের সাতপাই এলাকার কালীবাড়ি মন্দির থেকে প্রতিমার স্বর্ণালংকার চুরি হয়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৪ লাখ ১৮ হাজার ৬০০ টাকা।
জেলা শহরে থানা সংলগ্ন এলাকা থেকে দিনদুপুরে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনায় শহরজুড়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। চুরির বিষয়টি উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট থানায় করা হয় মামলা।
তবে মামলার আগেই তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ছুটে গিয়েছিলেন, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকবর আলী মুনসী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোরশেদা খাতুনসহ মডেল থানার অফিসার ইন-চার্জ তাজুল ইসলামসহ সকল পুলিশ সদস্যরা।
এসময় পুলিশ সুপার মন্দির পরিচালনা পর্ষদের নেতাকর্মীসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুলিশের ওপর আস্থা রাখার কথা বলে চুরি যাওয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধারের আশ্বাস দেন। এবং তারই প্রেক্ষিতে পুলিশ সুপারের দিকনির্দেশনা মাঠে নেমে পড়েন তদন্তকারী কর্মকর্তা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ত্রিদীপ বীরসহ টিমের অন্যান্য সদস্যরা।
পরে ঘটনার দিন পার হতে না হতেই পরদিন বিকেলে অর্থাৎ বুধবার স্বর্ণালংকার উদ্ধারসহ চোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অতিদ্রুত সময়ে সকল মালামাল উদ্ধারসহ চোরকে গ্রেফতার করায় ফিরে আসে শহরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মনে স্বস্তি। প্রশংসিত হয় জেলা পুলিশ সদস্যরা। সফল অভিযানের পর পুলিশ বৃহস্পতিবার (০৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে ছিলো চোরের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার সবকিছু উদ্ধার করা হয়েছে।
সেসবের মধ্যে ছিলো- ১২ আনা ওজনের স্বর্ণের চুড়া, ৪ আনা ওজনের করে টিকলি ও নথ, ২ আনা ওজনের একজোড়া কানের দোল, হাতের চুড়ি ২ আনা ওজনের ২ জোড়া, চারটি চেইন, ২ জোড়া শাখা, বল চেইন, মন্ডু মালা, ৩ ভরি ওজনের ১ টি রুপার চুড়া, ৮ আনা ওজনের রুপার একটি কোমরের বিছা, নুপুর ও ব্রেসলেট ৬ টি ও ৪ ভরি ওজনের প্রতিমার হাতের একটি রুপার খর্গ।
মন্দিরে দিনদুপুরে চুরি করার ঘটনার সেদিনের নায়ক ছিলেন পেশাদার চোর সুমন সরকার আরাধন। সে জেলার আটপাড়া উপজেলার বাউসা কলাপাড়া গ্রামের স্বপন সরকার’র ছেলে। তাকে শহরের বারহাট্টা রুটের নৃসিংহ জিওড় আখড়া গেট থেকে গ্রেফতার করা হয়।