সৌমিন খেলন : স্কুলের টিফিনের খরচের জন্য বাবা-মায়ের দেয়া টাকা জমাতো কিশোরী তাইয়্যবা সুলতানা। দীর্ঘদিনের জমানোর অভ্যাস তার। এমনিতেই মাঝেমধ্যে কোনো গরীব দুঃখী দেখলে সেই জমানো টাকা থেকে সাহায্য করতো তাইয়্যবা।
এবার টিফিনের সেই জমানো পুরো টাকা ভেঙে কর্মহীন হয়ে পড়া অনাহারী মানুষের জন্য দ্বারে দ্বারে খাবার নিয়ে গেলো সে। কিশোরীর এমন মহানুভবতা দেখে রীতিমতো অবাক মা-বাবাসহ সব আত্মীয়স্বজন। পুলিশ কর্মকর্তার সন্তান সুন্দর মনের অধিকারী তাইয়্যবা ময়মনসিংহ শহরের বাসিন্দা।
শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত চরপাড়া এলাকা ঘুরে নব্বইটি পরিবারে বিভিন্ন ধরণের খাদ্য সহায়তা প্রদান করে কিশোরী তাইয়্যবা। প্রশংসনীয় তার এই কর্মকাণ্ড সম্পর্কে এনএনবি বাংলাকে জানায়, টাকা তো জীবনের জন্যই। যে টাকা মানুষের মঙ্গলে আসে না সেই টাকার কোনো মূল্য আছে বলে সে মনে করে না।
সমাজে এমন অনেক পরিবার আছে না খেয়ে মরে যাবে কিন্তু লজ্জা ভেঙে কোথাও সাহায্য চাইতে যাবে না। সামাজিকতা নিজের অবস্থান চিন্তা করে কষ্ট পাবে শুধু। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন ধারার কষ্টের চিত্রটি উপলব্ধি করায় ব্যক্তিগতভাবে নেয়া হয় উদ্যোগ। মানুষের কষ্টেনর কথা চিন্তা করে টিফিনের জমানো টাকা ভেঙে দেয়া হয় খাদ্য সহায়তা।
জাতীর এই ক্রান্তি লগ্ন সৃষ্টি না হলে জমানো টাকায় হয়তো পছন্দের কোনো জামাকাপড় বা কসমেটিকস কেনা হতো। এবার তা হয়নি বলে এ জন্য দুঃখ নেই বরং খুশি, কারণ এবার টাকাটা উপযুক্ত কাজে ব্যবহার হয়েছে। ছোট থেকেই পরিবারে দানের দৃশ্য, মানুষকে আপন করে তাদের সুখ দুঃখে পাশে দাঁড়ানোর দৃশ্যপট তৈরি করতে দেখেছে বাবা-মাকে। তাদের কাছ থেকেই শেখা মানুষকে ভালোবাসা। খাদ্য সহায়তা দেয়ার কথা জেনে পুলিশ কর্মকর্তা বাবা ও গৃহিণী মা দুজনেই টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বলে জানায় কিশোরী তাইয়্যবা।