এ কেমন শিক্ষা, এ কেমন ব্যবহার!

এ কেমন শিক্ষা, এ কেমন ব্যবহার!

সৌমিন খেলন : করোনা মহামারীতে জনকল্যাণে ঘোষিত সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে লকডাউনে নিজেদের জীবন বাজি রেখে মাঠে কাজ করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

সামাজিক দূরত্ব আর স্বাস্থ্য সচেতনতা নিশ্চিত করে করোনা সংক্রমণ রোধে প্রতি মুহূর্তে কাজ করে যাচ্ছেন পুলিশ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রটরা।

দায়িত্ব সামলাতে বা জনকল্যাণে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই অর্জন করছেন নিত্যনতুন তিক্ত অভিজ্ঞতা।

রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে এলিফ্যান্ড রোডে চিকিৎসক পরিচয় দেয়া এক নারী, পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে করেছেন অসৌজন্যমূলক আচরণ।

যা নিয়ে ইতোমধ্যে দেশজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। নারীর ব্যবহারে রীতিমতো হতবাক দায়িত্বরতরা। লকডাউন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আবারো নতুন তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেন তারা।

প্রাইভেটকারে চড়া নারীর মুভমেন্ট পাস বা পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়াতেই ঘটে যত বিপত্তি। শুরুতে নারী চিকিৎসকের গাড়ি থামিয়ে পরিচয়পত্র দেখতে চেয়েছিলেন পুলিশ।

তখন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি করে বেজায় চটে যান চিকিৎসক। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটকে শুরু করেন তুই-তুকারি সম্বোধন! পুলিশকে বলেন, ‘তুই মেডিকেলে চান্স পাস নাই, তাই তুই পুলিশ। আমি চান্স পাইছি তাই আমি ডাক্তার।’

তারপরও বারংবার অনুরোধ করে পরিচয়পত্র দেখতে ব্যর্থ হন পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট। পরিচয়পত্র তো দেখাননি বরং পুলিশকে হুমকিধামকি আর গালিগালাজ শুরু করেন।

এ কেমন শিক্ষা, এ কেমন ব্যবহার!

ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ক্লিপ থেকে শোনা যায়, ওই নারী পুলিশকে বলেছেন, ‘করোনায় জীবন গেছে কয়জন ডাক্তারের, আর আপনারা কতজন মরছেন। আমার কাছে আবার চান মুভমেন্ট পাস।’

নারীকে নিজেকে, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলীর মেয়ে বলেও দাবি করেন। তখন নারীর কাছে পুলিশ নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে পরিচয় দেন।

রাগে টগবগ করতে থাকা নারী এক পর্যায় পুলিশকে বলেন, ‘ডাক্তার হয়রানি বন্ধ করতে হবে। আমি বিএসএমএমইউ প্রফেসর, বীর বিক্রমের মেয়ে। আমাকে আপনারা হয়রানি করতে পারেন না।’ পরে পুলিশের আরেক সদস্য বলেন, ‘আপা আপনাকে তো হয়রানি করা হচ্ছে না। আপনার কাছে পরিচয়পত্র চাওয়া হচ্ছে।’

নিজ গাড়িতে ওঠে যান ওই নারী চিকিৎসক। তখন পুলিশের এক সদস্য ওই নারীকে বলেন, ‘আপনি আমাকে তুই তুই করে বলছেন কেন?’ এক পর্যায়ে পুলিশকে তিনি হয়রানি করলে আন্দোলনের হুমকি দেন। পুলিশ জবাবে বলছে, ‘আমাদের আন্দোলনের ভয় দেখাচ্ছেন।’ পুলিশকে নারী চিকিৎসক আরো বলেন, ‘আমি কে, সেটা এখন তোদের দেখাচ্ছি হারামজাদা।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *