সাংবাদিকদের সাথে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট’র এ কেমন আচরণ!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
এনএনবি বাংলা.কম

খাগড়াছড়ি : নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে নবনির্মিত শিশু একাডেমির ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন জেলায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা।

বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অথিতি ছিলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।

জানা যায়, এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আগেই সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন। পরে নির্ধারিত সময়ে সাংবাদিকরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। কিন্তু সেখানে সবার জন্য আসন নিশ্চিত করলেও সাংবাদিকদের জন্য তা করা হয়নি।

বরং সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে বিষয়টি জেলা প্রশাসন, শিশু বিষয়ক কর্মকর্তাদের দৃষ্টিতে আনা হলেও কেউ-ই তা গুরুত্ব দেননি। পরে মন্ত্রীর গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. আলমগীর সাংবাদিকদের নিয়ে প্রথম সারির আসনে বসতে দেন। কিন্তু সেখানেও বিপত্তি বাধায় মেহেদী হাসান শাকিল নামে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী এক ম্যাজিস্ট্রেট।

তিনি সাংবাদিকদের আসন ছেড়ে দেয়ার কথা জানিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন। এমনই দাবি করেছেন, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি জহুরুল আলম।

অনুষ্ঠান চলাকালে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের এ ধরণের আচরণ সাংবাদিকদের জন্য অবমাননাকর মন্তব্য করে সহ-সভাপতি আলম জানান, প্রশাসনিক ওই কর্মকর্তার আচরণে উপস্থিতি সাংবাদিকরা প্রত্যেকে বিব্রত হয়ে অনুষ্ঠান থেকে বের হয়ে পড়েন এবং প্রতিবাদ করেন।

ঘটনা নিয়ে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের মুহাম্মদ জানান, বর্তমান জেলা প্রশাসক যোগদানের পর থেকেই প্রশাসনের সাথে সাংবাদিকদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং এই দায় কোনোভাবেই তিনি এড়াতে পারেন না।

দূরত্ব কথার ব্যখ্যা টানতে গিয়ে সাংবাদিক এই নেতা জানান, প্রশাসনের সভা থেকে শুরু করে ভ্রাম্যমাণ আদালত ; কোথাও নিউজ সংগ্রহের জন্য উপস্থিত হলেই এখন সাংবাদিকদের হেয় করা হয়! উদ্ভট এ ধরণের পরিস্থিতি আগে কখনোই হয়নি।

জেলার প্রায় সাংবাদিকরাই এখন হেনস্তার শিকার। নষ্ট হয়ে গেছে সাংবাদিক প্রশাসনের সুসম্পর্ক মন্তব্য করেছেন, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি জীতেন বড়ুয়া।

তিনি জানান, বৃহত্তর স্বার্থে এতদিন চুপ থাকা হয়েছে তবে নিজেদের অস্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে এভাবে আর চলতে পারে না। আজকের পরিস্থিতি কোনোভাবে ছাড় দেয়ার মতো নয় সুতরাং অনুষ্ঠানের সংবাদ বর্জন করা হয়েছে।

কৃতকর্মের জন্য অভিযুক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে জানিয়ে সভাপতি জীতেন বড়ুয়া অন্যথায় প্রশাসনের সব কর্মসূচি ভবিষ্যতে বর্জনের হুশিয়ারি দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক চিংমে প্রু মারমা, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কানন আচার্য্যসহ জেলায় কর্মরত অন্যান্য সাংবাদিকরা।

এদিকে অভিযুক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান শাকিল’র কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে পারেন না। সাংবাদিকদের আসন থেকে উঠে যাওয়ার কথা তিনি বলেছেন কি-না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে বক্তব্য নেয়ার পরামর্শ দেন।

পরামর্শ অনুযায়ী জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসের মোবাইল ফোন নাম্বারে কল করে যোগাযোগ করা হয়। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি স্বাভাবিক কন্ঠস্বর বদলে নেন। ঘটনার বিষয়ে উত্তর না দিয়ে সাংবাদিকের বিস্তারিত জানতে চান এবং কথার মধ্যে একপর্যায় মোবাইল সংযোগটি কেটে দেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *