করোনাকে হারিয়ে ভৈরবে বাবা-মেয়েরা সুস্থ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

এনএনবি বাংলা.কম

কাজী আবুল হোসেন, হালিমা তুর্য স্নিগ্ধা ও নওশিন শার্মিলী নিরা ছবি- সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় কাজী আবুল হোসেন এবং তার দুই মেয়ে হালিমা তুর্য স্নিগ্ধা ও নওশিন শার্মিলী নিরা পরাজিত করে দিয়েছেন করোনা (কোভিড-১৯) ভাইরাস। আক্রান্ত হওয়ার পর মনোবল ধরে রেখে নিয়ম মেনে চিকিৎসা নেয়ায় প্রাণঘাতী করোনাকে পরাজিত করতে পেরেছেন তারা।

এমনই দাবি করছেন আক্রান্তের পর সুস্থ হওয়া একই পরিবারের এই তিন সদস্য। এগারো দিন আগে অর্থাৎ শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) করোনায় প্রথম আক্রান্ত হন স্নিগ্ধা। পরে রোববার (১৯ এপ্রিল) করোনায় শনাক্ত হন স্নিগ্ধার বাবা আবুল হোসেন ও নওশিন শার্মিলী নিরা। স্নিগ্ধা ওষুধ কিনতে গিয়ে ফার্মেসিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

কারণ, এরআগে ওই দোকানের মালিক করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসায় যান। এদিকে আক্রান্ত হওয়ার পর তিন বাবা-মেয়ে কেউ হারাননি তাদের মনোবল। যদিও বাবা হোসেনের হৃদরোগসহ শরীরে কিছু রোগ রয়েছে। কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য তারা ভর্তি হন। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাওয়া শুরু করেন। সাতদিন চিকিৎসার পর শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) ফের তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। সোমবার (২৭ এপ্রিল) হাতে পাওয়া ওই রিপোর্টে ফলাফল আসে নেগেটিভ।

আক্রান্ত তিনজন জানান- নমুনা সংগ্রহে করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসার পর করোনার সঙ্গে যুদ্ধের জন্য মনস্থির করা হয়। মনে মনে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় মৃত্যুর সঙ্গে লড়া হবে পাঞ্জা তারপরও করোনা’র কাছে পরাজিত হওয়া যাবে না। সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন ঘটাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রতিদিন ৫ বার গরম পানিতে ভাঁপ নেয়া হয়েছে। চিকিৎসকের দেয়া ওষুধ খাওয়াসহ করা হয়েছে গারগিল, কমপক্ষে দশবার আদা ও লেবুর চা-শরবতপান।

হাসপাতালে থাকা-খাওয়ায় কোনো সমস্যা ছিলো না তবে চিকিৎসক বা নার্সরা রোগীদের কাছে আসে না। দিনে একবার ডাক্তার ওয়ার্ডে এসে চোখ বুলিয়ে যায়। দূরে একটি কেবিনে নার্সরা ওষুধ ও খাবার রেখে দেন। তারা চলে গেলে নিজে এনে খেতে হয়। তবে আজ মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) নিশ্চিত হতে আবারও নমুনা পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আল্লাহ এঁর রহমতে নমুনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসলে ছাড়পত্র দিয়ে দিবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন (সিএস) মো. মজিবুর রহমান এনএনবি বাংলাকে জানান, ভৈরবে প্রথমে পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আক্রান্ত হন। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে এক যুবক আরও এক এসআই এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। সবমিলিয়ে চিকিৎসা নিতে ছাব্বিশজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হয়।আক্রান্তদের প্রত্যেকে সুস্থ আছেন।

ভৈরব উপজেলার একই পরিবারের আক্রান্ত তিনজন বাবা-মেয়ে যথাক্রমে হোসেন, স্নিগ্ধা ও নওশিনের নমুনা পরীক্ষায় ফলাফল নেগেটিভ হয়েছে দুবার। আজ মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) আবারও নমুনা পরীক্ষা করা হবে। আশা করা যাচ্ছে আজকের রিপোর্টের ফলাফলও নেগেটিভ আসবে আর হাসিখুশি মুখ নিয়ে পরিবারের সবার মাঝে বাড়ি ফিরবেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *